সহায়ক মূল্যে খারিফ মরসুমে চাষিদের কাছ থেকে ধন কেনা শুরু হল শনিবার থেকে। নতুন খরিফ মরসুমে রাজ্যজুড়ে চাষিদের কাছ থেকে ৭০ লক্ষ টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে খাদ্য দফতর। তবে এখনও আমন ধান না ওঠায় প্রথম দিন চাষিদের খুব বেশি দেখা যায়নি ধান ক্রয় কেন্দ্রগুলিতে। নভেম্বর থেকে ধান কেনা শুরু হলেও মূলত ধান ক্রয়ে গতি আসে ডিসেম্বর থেকে। কারণ।এই সময় আমন ধান ওঠে। তবে এবার বন্যা, নিম্নচাপ এবং ঘূর্ণিঝড়ের ফলে ধান চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ফলে ধানের ফলন বা গুণগত মানও খুব একটা ভালো হয়নি। চাষিদের আশঙ্কা, ফসলের গুণমানের অজুহাত তুলে কুইন্টালপ্রতি অনেকটা ‘বাটা’র (বাদ দেওয়ায়) দাবি করতে পারে চালকলগুলি। তাই এনিয়ে জটিলতা দেখা দিলে সরকারি হস্তক্ষেপের দাবি করেছেন চাষিরা।
আরও পড়ুন: ওজনে কারচুপি রুখতে ধানক্রয় কেন্দ্রে CCTV, বেশি বিক্রি করলেই ভাতা পাবেন চাষিরা
রাজ্যের অন্যান্য এলাকার মতো হুগলিতেও চলতি খরিফ মরসুমে সরকারি সহায়ক মূল্যে ধান কেনা শুরু হয়েছে। প্রথমদিন এখানেও খুব বেশি ধান বিক্রি করতে দেখা যায়নি চাষিদের। সবমিলিয়ে প্রথম দিন হুগলি জেলায় ২৯ কুইন্টাল ৩০ কেজি ধান কেনা হয়েছে। তাও সেগুলি পুরোনো আউশ দান।মূলত রাজ্য সরকার প্রতিবার বেনফেড, কনফেড কিংবা নাফেড- এর মাধ্যমে ধান কিনে থাকে। তবে এবার আরও দুটি সংস্থা ডব্লুবিইসিএসসি এবং বিপিএএমসিএলের মাধ্যমেও ধান কিনছে সরকার। এছাড়াও ধান বিক্রিতে চাষিদের উৎসাহিত করতে ধানের সহায়ক মূল্যের দাম বাড়ানো হচ্ছে এবার। সেই সঙ্গে চাষিদের কুইন্টাল প্রতি ২০ টাকা অতিরিক্ত টাকা উৎসাহ ভাতা দিচ্ছে রাজ্য সরকার।
প্রসঙ্গত, এবার ধানের সহায়ক মূল্য প্রতি কুইন্টালে প্রায় ১৩০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। গতবার কুইন্টাল পিছু এই দাম ছিল ২১৮৩ টাকা। এবার তা করা হয়েছে ২৩০০ টাকা।হুগলি জেলায় ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা সাড়ে ৭ লক্ষ টন স্থির হয়েছে। তবে চাষিরা আশঙ্কা করছেন, দুর্যোগে আমন ধানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পর অধিকাংশ ক্ষেত্রেই গুণমান ঠিক থাকবে না। এক কুইন্টাল ধান থেকে যে চাল পাওয়ার কথা তা পাওয়া যাবে না। এই অজুহাতে কুইন্টাল প্রতি অনেক ধান বাদ দেওয়া হতে পারে। তাই তারা চাইছেন ফসলের গুণমানের অজুহাতে কুইন্টালপ্রতি বাদ দেওয়া নিয়ে কোনও সমস্যা হলে সরকার যেন হস্তক্ষেপ করে।
এবিষয়ে জেলা খাদ্য দফতরের এক আধিকারিক জানান, কতটা ধান বাদ দেওয়া হবে তা নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। পরিস্থিতি দেখে ধান বাদের বিষয়টি ঠিক করা হবে। এই জেলায় ৬০টি সিপিসি-ই খোলা হয়েছে। সেখানে চাষিদের কাছ থেকে ধান কেনা হচ্ছে। এছাড়া, সমবায় সমিতি, স্বনির্ভর গোষ্ঠী এবং এফপিও থেকেও ধান কেনা হবে। ওজন যাতে স্বচ্ছ হয় তার জন্য ইলেকট্রনিক যন্ত্রের সঙ্গে ই-পস যন্ত্রও যুক্ত থাকবে। এদিকে, চলতি মরসুমে হুগলিতে এখনও পর্যন্ত ৭৩টি চালকল চুক্তিবদ্ধ হয়েছে।