আজ, রবিবার ভাইফোঁটা পড়েছে। এই দিনে ভাইয়ের কপালে দিদি–বোন ফোঁটা দিয়ে দীর্ঘায়ু এবং মঙ্গল কামনা করেন। সেখানে কলকাতার বুকে দেখা গেল এক অনষরকম ছবি। যে ছবি দেখা যাবে ভাবতে পারেননি অনেকেই। এবার ভাইফোঁটার বাঁধনে পড়ল সিটি অফ জয়ের নস্টালজিক ট্রাম। যা উঠে যেতে চলেছে শহরের বুক থেকে। একটা চিহ্ন অবশ্য থাকবে। তবে সেটা সামান্য পথেই। এই নস্টালজিক ট্রামের বন্ধের কথা সামনে আসতেই প্রতিবাদে সরব হন তিলোত্তমার হাজার হাজার মানুষ। এবার সেই ট্রামকেই ফোঁটা দিলেন কয়েকজন বোনেরা।
এই দৃশ্য আগে কখনও দেখা যায়নি। ট্রামকে ভাইফোঁটা দেওয়ার ঘটনা এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছে। এই ট্রাম ২০১৫ সালেও কলকাতা শহরে ২৫টি রুটে চলত। কিন্তু এখন তা কয়েকটিতে এসে ঠেকেছে। রাজ্য সরকারের যুক্তি, কয়েকটা রুটে ট্রাম চালিয়ে বিপুল খরচ হচ্ছে। সেখান থেকে লাভের মুখ দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না। এখন সেই অর্থে আর যাত্রীও হয় না। তবে শহরের নাগরিকরা এই নস্টালজিক ট্রাম বন্ধ হোক সেটা চান না। কলকাতার ঐতিহ্যকে ইতিহাসের পাতায় দেখতে নারাজ তাঁরা। তাই এবার ট্রামে পড়ল চন্দনের ফোঁটা। ভাইফোঁটার দিনে ট্রাম বাঁচাতে উদ্যোগ নিলেন বহু ট্রামপ্রেমী নাগরিকরা। যার সাক্ষী থাকল কল্লোলিনী কলকাতা।
আরও পড়ুন: ‘আমার জীবনে কয়েকটা মাস দুর্ঘটনা ঘটেছিল’, বিজেপি যাওয়া নিয়ে আত্ম উপলব্ধি রাজীবের
আজ রবিবার এই সুন্দর একটি ছবি দেখা গেল কলকাতার বুকে। সকালে ধর্মতলা ট্রাম ডিপোয় ট্রামে ফোঁটা দিলেন শহরের নাগরিকরা। সেখানে অতীত ইতিহাস নিয়েও বিস্তর চর্চা হয়েছে। ট্রামে বসে প্রেম করার আনন্দ উঠে আসে অনেকের মুখেই। এই ট্রাম যে বহু ঘটনার সাক্ষী তাও শোনা যায়। তাই ট্রাম শহর থেকে উঠে যাক সেটা চান না অনেক নগরবাসী। তাই ট্রামের গায়ে ফোঁটা দিয়ে নিজেদের মনের কথা তুলে ধরলেন এই শহরের বোনেরা। এভাবে কি অবলুপ্তির পথে যাওয়া ট্রামকে আটকানো সম্ভব? উঠছে প্রশ্ন।
এই ট্রাম অনেকের ভালবাসার যানবাহন। এখানে আগে মান্থলি করে মানুষজন চড়ত। অফিসযাত্রী এখানে ভালই ভিড় করতেন। এখন সেসব অতীত। যদিও নস্টালজিক ট্রাম দীর্ঘজীবী হোক সেটা চাইছেন কলকাতার বোনেরা। তাই তো আজ চন্দন–মিষ্টির থালা হাতে নিয়ে একজন বোন ফোঁটা দিয়ে বললেন, ‘আমরা ট্রামকে খুব ভালবাসি। তাই ট্রামের মঙ্গল এবং দীর্ঘায়ু কামনা করেই আমরা ফোঁটা দিলাম ভাইফোঁটার দিনে। আমাদের শরীরে যেমন প্রাণ আছে, তেমনই কলকাতার শরীরেও প্রাণ আছে। আর এই কলকাতার ঐতিহ্য হল ট্রাম। তাই এই ট্রাম ছাড়া কোনওভাবেই কলকাতার কথা ভাবাই যায় না। তাই ভাইফোঁটার এই শুভ দিনে দাদা ট্রামের দীর্ঘায়ু কামনা করতে আমরা একত্রিত হলাম।’