একের পর এক শব্দবাজি। একেবারে কান ঝালাপালা হয়ে যাচ্ছে। রাতে ঘুম হচ্ছে না। খালি এপাশ ওপাশ। চমকে উঠছেন বৃদ্ধ, বৃদ্ধারা। এদিকে সাহায্য চেয়ে থানায় ফোন করবেন এটাই তো স্বাভাবিক। কিন্তু সেই পুলিশের কাছ থেকে যে জবাব এসেছে তা উদ্বেগের। তা লজ্জার!
কলকাতার এক আবাসনের সামনে ক্রমাগত বাজি ফাটছিল। রাত সাড়ে ৯টা পেরিয়ে গিয়েছে। বাজির জেরে তিতিবিরক্ত হয়ে গিয়ে একসময় এক বৃদ্ধ দম্পতি তাঁদের আত্মীয়কে গোটা বিষয়টি জানান। এরপর ওই আত্মীয় লালবাজারে ফোন করে গোটা বিষয়টি জানান। এরপর পুলিশও যায় ঘটনাস্থলে। পুলিশ অন্তত ৪৫ মিনিট ওই এলাকায় ছিল বলে খবর। তখন বাজি ফাটানো বন্ধ হয়ে যায়।
এরপর পুলিশ ফিরে আসে। রাত ক্রমশ গভীর হতে থাকে। আর পুলিশ চলে যেতেই শুরু হয় ফের বাজি ফাটানো। ঢাকুরিয়ার একটা বেসরকারি হাসপাতালের কাছেই ওই আবাসন। সেখানে শব্দ বিধিকে তোয়াক্কা করে কেন বাজি ফাটানো হল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
এদিকে বাজির আওয়াজে ওই বৃদ্ধ দম্পতি ক্রমেই অসুস্থ বোধ করতে থাকেন। তারপর তাঁরা ফের ওই আত্মীয়কে সমস্যার কথা জানান। ফের সেই আত্মীয় লালবাজারে ফোন করেন। এরপর ফোন পেয়েই কার্যত বিরক্ত পুলিশ। আনন্দবাজারের প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে, ওই আত্মীয় জানিয়েছেন, স্থানীয় লেক থানা থেকে আমাকে ও প্রবীণ ওই মানুষটিকে ফোন করা হয়েছিল। তিনি জানতে চান বার বার লালবাজারে ফোন করে কেন ব্যস্ত করা হচ্ছে? এমনকী বাজির তাণ্ডব সহ্য করার পরামর্শ দিয়ে ফোন করতে বারণ করে দেন তিনি।
তবে ওই দম্পতির একারই এমন অভিজ্ঞতা হয়েছে সেটা নয়। একাধিক বাসিন্দার দাবি ওপরমহলে ফোন করলেই চটে যান থানাস্তরের আধিকারিকরা। কিন্তু কেন থানাস্তর থেকে আগাম ব্যবস্থা নেওয়া হয় না তা নিয়ে প্রশ্নটা থেকেই গিয়েছে।
এদিকে এবারও ফের উঠল দেদারে শব্দবাজি ফাটানোর অভিযোগ। কলকাতার বিভিন্ন প্রান্তে শব্দবাজির তাণ্ডবে কান পাততে পারেননি সাধারণ মানুষ।
গোটা ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে নানা প্রশ্ন। কেন পুলিশ শব্দবাজি রুখতে কঠোরতম ব্যবস্থা নিল না। শব্দবাজিতে অতিষ্ঠ হলে পুলিশের কাছেই তো ফোন করবেন সাধারণ মানুষ। সেক্ষেত্রে সেই পুলিশই যদি ফোন পেয়ে বিরক্ত হয়, সেই পুলিশই যদি ফোন করতে বারণ করে দেয় তাহলে সাধারণ অসহায় মানুষ কার কাছে যাবেন?