এবার থেকে আর আঞ্চলিক পরিচালকের মাধ্যমে নয়, যেকোনও বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা হু-এর সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করতে চায় বাংলাদেশ। এই মর্মে ইতিমধ্যেই সেদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের তরফ থেকে হু কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
কিন্তু, হঠাৎ কেন এই পদক্ষেপ করল তারা? এর কারণ হলেন সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। তিনি বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা হু-এর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক।
গত বছরের ১ নভেম্বর হু-এর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক পদে নির্বাচিত হন সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। সেই পদে পরবর্তী পাঁচ বছরের তিনি দায়িত্বভার গ্রহণ করেন গত ১ ফেব্রুয়ারি।
অতএব, নিয়ম অনুসারে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে যদি হু-এর সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে হয়, কিংবা হু যদি বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ করতে চায় - উভয় ক্ষেত্রেই সেটা করতে হবে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের মাধ্যমে।
আর এতেই আপত্তি রয়েছে বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের। তাই, সায়মাকে পাশ কাটিয়ে তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপনের আবেদন জানিয়ে হু-কে চিঠি পাঠিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
বুধবার সন্ধ্য়ায় আয়োজিত একটি সাংবাদিক বৈঠকে একথা জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, উপ–প্রেস সচিব মহম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার ও অপূর্ব জাহাঙ্গির।
বাংলাদেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এই সংক্রান্ত যেসমস্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে, তাতে জানানো হয়েছে, অপূর্ব জাহাঙ্গির হু-কে এই চিঠি পাঠানোর বিষয়টি সম্পর্কে সাংবাদিকদের অবহিত করেন।
তাঁদের এই পদক্ষেপের নেপথ্যে একাধিক যুক্তি দেখিয়েছেন জাহাঙ্গির। তাঁর দাবি, বর্তমানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের পরিচালকের দায়িত্বে থাকা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল একেবারেই নিষ্ক্রিয় রয়েছেন।
উপরন্তু, তাঁর বিরুদ্ধে বাংলাদেশের একাধিক আর্থিক ও ফৌজদারি মামলা রুজু করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, গত ৫ অগাস্ট শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ছাড়ার পর থেকে এখনও পর্যন্ত তাঁর বিরুদ্ধে ২০০টিরও বেশি মামলা রুজু করা হয়েছে।
এর মধ্যে কয়েকটি মামলায় শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এবং মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকেও আসামি করা হয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের বক্তব্য হল, এই অবস্থায় সায়মাকে মাঝে রেখে বাংলাদেশের পক্ষে হু-এর সঙ্গে কাজ করা সম্ভব নয়। সেটা বিস্তারিতভাবে হু কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে, দুই পক্ষের মধ্য়ে সরাসরি যোগাযোগের ব্যবস্থা করার দাবি জানানো হয়েছে।