কেউ কৃষ্ণ সেজে গাড়িতে বসেছিলেন। কেউ আবার বাঁশি বাজাচ্ছিলেন। জন্মাষ্টমী উপলক্ষ্যে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় যে শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়েছিল, তা রঙিন হয়ে থাকল। কড়া নিরাপত্তার মধ্যে হাজার-হাজার মানুষ সেই বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় যোগ দেন। মেতে ওঠেন জন্মাষ্টমীতে।
শুক্রবার বিকেলে ঢাকার ঐতিহাসিক ঢাকেশ্বরী মন্দির থেকে শোভাযাত্রা শুরু হয়। শোভাযাত্রায় পা মেলান হাজার-হাজার মানুষ। ছেলেরা গেরুয়া বসন পরে আসেন। মেয়েরা শাড়ি পরেন। অনেকেই শ্রীকৃষ্ণের জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ের মতো সেজে আসেন। আবার অনেকের হাতে কুলো ছিল। কুলোয় লেখা ছিল ‘শ্রীকৃষ্ণ জন্মাষ্টমী’। কড়া পুলিশি নিরাপত্তার মধ্যেই ঢাকার বিভিন্ন এলাকা দিয়ে ঘুরে বাহাদুর শাহ পার্কে শেষ হয় শোভাযাত্রা।
এবার জন্মাষ্টমী উপলক্ষ্যে ঐতিহাসিক ঢাকেশ্বরী মন্দিরে তিনদিন ব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ পুজো উদযাপন পরিষদ এবং মহানগর সর্বজনীন পুজো কমিটি। ইসকনের বিভিন্ন মন্দিরেও জন্মাষ্টমী পালন করা হয়। গত বুধবার (১৭ অগস্ট) ভারতীয় হাইকমিশনে বড় অনুষ্ঠান হয়েছিল। আয়োজন করা হয়েছিল বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও।
জন্মাষ্টমীতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার শুভেচ্ছা
গত বছর দুর্গাপুুজোর সময় বাংলাদেশের একাংশে সাম্প্রদায়িক হিংসা ছড়িয়েছিল। সেই পরিস্থিতিতে এবার জন্মাষ্টমীতে হিন্দুদের আশ্বস্ত করে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনা বলেন, ‘নিজেদের সংখ্যালঘু ভাববেন না। বাংলাদেশে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষের সমান অধিকার।’ সঙ্গে তিনি বলেন ‘এদেশের মাটিতে সকলের সমান অধিকার। আমার যা অধিকার, আপনাদেরও তাই।’
আরও পড়ুন: জন্মাষ্টমীতে বেলুড় মঠে দুর্গাপুজোর ঢাকে পড়ল কাঠি, এবার পুজোয় যেতে পারবেন সকলে
বৃহস্পতিবার ঢাকেশ্বরী মন্দির এবং চট্টগ্রামের জেএম সেন হলে জন্মাষ্টমীর অনুষ্ঠানে ভার্চুয়াল মাধ্যমে যোগ দিয়েছিলেন হাসিনা। সেখানেও সম্প্রীতি রক্ষার বার্তা দিয়েছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছিলেন, ‘সনাতন হিন্দু সম্প্রদায়কে বলব, আপনারা নিজেদের সংখ্যালঘু মনে করবেন না। আপনারাও সমান নাগরিক অধিকার পাবেন।’ পাশাপাশি তিনি বলেছিলেন, ‘হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ যেন হীনমন্যতায় না ভোগেন। বাংলাদেশের নাগরিকরা সবাই দেশের মালিক এবং নাগরিক হিসেবে সকলের সমান অধিকার রয়েছে।’